রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথের মৃত্যু
এলিজাবেথ আলেকজান্ড্রা ম্যারি (২১ শে এপ্রিল ১৯২৬ — ৮ সেপ্টেম্বর ২০২২)
রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথের মৃত্যু যেন নীরব করে দিয়েছে ব্রিটনবাসিকে। রানির মৃত্যুতে ব্রিটেনের আকাশ যেন ভারী হয়ে গেছে। শোকের ছায়া নেমে এসেছে সারা ব্রিটেন জুড়ে।
![]() |
এলিজাবেথ আলেকজান্ড্রা ম্যারি |
বৃটেনের ইতিহাসে দীর্ঘ সময় ধরে ব্রিটিশ রাজ সিংহাসন ধরে রাখার কৃতিত্বের অধিকারী তিনি। ৯৬ বছরের দীর্ঘ জীবনে রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথ সাক্ষী হয়েছেন রাজপরিবারের নানা ঘটনার, পারিবারিক নানা আয়োজনের। একই সাথে বিশ্বের নানা উত্থান-পতনেরও সাক্ষী তিনি। ব্রিটিশ রাজ পরিবারের একমাত্র উত্তরাধিকারীর সৌভাগ্য নিয়ে ১৯২৬ সালের একুশে এপ্রিল জন্মগ্রহণ করেন এলিজাবেথ আলেকজান্দ্রা। ২১ বছর পর বাবা ষষ্ঠ জর্জ ১৯৩৭ সালে বৃটেনের সিংহাসনে বসেন। আর সেই সময় থেকেই বাবা-মায়ের প্রথম সন্তান হিসেবে এলিজাবেথ সিংহাসনের উত্তরাধিকারী ছিলেন।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর নারী বিভাগে কর্মরত থেকে জনসাধারণের দায়িত্ব পালন করেন।এরপর .১৯৪৭ সালে তিনি বিয়ে করেন গ্রিক ও ডেনমার্কের রাজপুত্র ডিউক অব ফিলিপ্সকে । এলিজাবেথ-ফিলিপ্স দম্পতির ৪ সন্তান। বিয়ের কয়েক বছর পর মাত্র ১৭ বছর বয়সে ১৯৫৩ সালে ওয়েস্ট মিনিস্টার এবেতে জমকালো আয়োজনের মধ্যদিয়ে অভিষেক হয় রানির। সিংহাসনে আরোহণের দৃশ্য দেখেছিলেন কোটি মানুষ। তবে তার অভিষেকের পর রাজ্য পরিচালনা মোটেও সহজ ছিলনা। অনেকটা ভঙ্গুর সাম্রাজ্যকে স্থিতিশীল করতে তাকে অনেক বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দিতে হয়েছে। তার এই ৭০ বছরের শাসন আমলে বিশ্বের নানা রকম সামাজিক এবং রাজনৈতিক পরিবরতন হয়েছে।উপনিবেশিক শক্তিতে না থাকায় বিশ্বের সাথে ব্রিটেনের সম্পর্ক কেমন হতে পারে তার ছক কষতে হয়েছে তাকে। আর সেই সাথে খাপ খাইয়ে নিতে স্থিতিশীলতা এবং ধারাবাহিকতা ধরে রেখেছিলেন তিনি। কমনওয়েলথ প্রধানসহ সাতটি কমনওয়েলথভুক্ত দেশের রেজিমেন্টেরও প্রধান ছিলেন তিনি। তিনি বিশ্বের বিভিন্ন দেশ সফর করেন বিভিন্ন সময়ে। এর মধ্যে অনেক ঐতিহাসিক দর্শন, ৫বার পোপের দর্শন উল্লেখযোগ্য ।যদিও ব্যক্তিগত বিভিন্ন কারনে রানি খবরের শিরোনামে ছিলেন নানা সময়ে।পারিবারিক জীবনে ছেলে প্রিন্স চার্লসের বিয়ের পর প্রিন্সেস ডায়নার সাথে বিবাহ বিচ্ছেদ এবং ডায়নার মৃত্যু ব্যাপক আলচনার সমালোচনার জন্ম দেয়।
রানির ভুমিকা নিয়েও প্রশ্ন ওঠে। তবে তার দুই নাতি প্রিন্স উইলিয়াম ও প্রিন্স হ্যারির বিয়ে এবং তাদের সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার প্রত্যেকটি মুহূর্ত উপভোগ করেছিলেন রানি। সবকিছু ছাপিয়ে সমর্থকদের কাছে রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ ব্রিটেনের অন্যতম শাসক হিসেবেই বিবেচিত ছিলেন।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন