মারা গেল রাশিয়ার স্পাই তিমি হাভালদিমির। রোববার (২ সেপ্টেম্বর) নরওয়ের সমুদ্র উপকূলে ভেসে ওঠে তিমিটির দেহ।

অবশেষে  মারা গেল রাশিয়ার স্পাই তিমি হাভালদিমির। রোববার (২ সেপ্টেম্বর) নরওয়ের সমুদ্র উপকূলে ভেসে ওঠে তিমিটির দেহ।

বন্দর নগরী রিসাভিকায় আলোচিত স্পাই তিমিটির মরদেহ ভেসে ওঠার খবরে সারাদেশে সৃষ্টি হয়েছে ব্যাপক আলোড়ন। ৫ বছর আগে নরওয়েতে প্রথম দেখা মেলে বেলুগা প্রজাতির তিমিটির। শরীরের সাথে ছিল গো-প্রো ক্যামেরা। স্পষ্ট ভাষায় যার গায়ে লেখা ছিল সেন্ট পিটার্সবার্গের ব্যক্তিগত যন্ত্র। সে থেকেই ধারণা করা হাভালদিমির কে গুপ্তচরের কাজে ব্যবহার করে মস্কো। এছাড়া ভ্লাদিমির পুতিনের সাথে মিল রয়েছে তিমিটির নামের শেষ অংশের। যা উসকে দিয়েছে আলোচনা। বার্তা সংস্থা এএফপি জানায়, হাভালদিমিরের মৃত্যুর কারণ এখনও জানা যায়নি। এছাড়া বেলুগা প্রজাতির তিমি হিসেবে মাত্র ১৫ বছরেই মৃত্যু তৈরি করেছে ধোঁয়াশা। কর্তৃপক্ষ জানায়, তিমির মরদেহটি নেক্রোস্কোপির জন্য সংরক্ষিত আছে। তবে এ বিষয়ে কোন মন্তব্য করেনি মস্কো প্রশাসন।

রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে বোঝার সাধ্য যেন কারোই নেই। জনশ্রুতি আছে, মানুষতো বটেই, নিজের ব্যক্তিগত গুপ্তচর হিসেবে পুষতেন বিশালাকৃতির তিমিও। পুতিনের বিশেষ এই গুপ্তচরটি বেলুগা প্রজাতির। মানুষের সঙ্গে মিশতে অভ্যস্ত। 

রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের নামের অংশবিশেষ নিয়ে নরওয়েতে পুতিনের গুপ্তচরকে ডাকা হতো ভালদিমির। সামরিক উদ্দেশে ডলফিনসহ সামুদ্রিক স্তন্যপায়ী প্রাণীদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার ইতিহাস আছে রাশিয়ার। তবে দু:সংবাদ হলো, পুতিনের কথিত এই গুপ্তচরের মরদেহ ভেসে উঠেছে নরওয়ের সমুদ্রে।

আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের খবর, বছরের পর বছর ধরে তিমির গতিবিধি অনুসরণ করছিলো মেরিন মাইন্ড নামের একটি সংগঠন। তবে সম্প্রতি ভালদিমিরের মরদেহ নরওয়ের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর রিসাভিকা উপকূলে ভাসমান অবস্থায় পাওয়া যায়। 

তিমিটিকে খুঁজে পায় মেরিন মাইন্ড সংগঠন। তিমিটির মরদেহ পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্যে ভালদিমিরকে কাছের একটি বন্দরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। পাঁচ বছর আগে নরওয়ের জলসীমায় প্রথমবারের মতো পুতিনের গুপ্তচর তিমির উপস্থিতি শনাক্ত করা হয়। সেই সময় তিমিটির সাথে সেট করা ছিলো গোপ্রো ক্যামেরাও।

সেখানে লেখা ছিলো, সেন্ট পিটার্সবার্গের যন্ত্র’। এরপর থেকেই এটিকে পুতিনের গুপ্তচর তিমি বলে ধারণা করতে শুরু করেন অনেকেই। যদিও এই ধারণাকে একেবারে উড়িয়ে দেয়নি বিশেষজ্ঞরা। তাঁরা বলছেন, অতীতে এমন ঘটনা দেখা গেছে। যদিও ভালদিমির ব্যাপারে কোন উত্তর আসেনি রাশিয়া থেকে। 

মেরিন মাইন্ডের প্রতিষ্ঠাতা সেবাস্টিয়ান স্ট্রান্ড জানান, তিমিটির মৃত্যুর কারণ এখনো অজানা। শরীরে আঘাতের কোনো দৃশ্যমান চিহ্ন নেই। পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য তিমির মরদেহ ঠান্ডা জায়গায় রাখা হয়েছে। তিমিটির বয়স প্রায় ১৫ বছর বলে ধারণা করা হচ্ছে। 

বেলুগা প্রজাতির তিমির জন্য এটা তেমন কোনো বয়স নয়। এই প্রজাতির তিমি ৬০ বছর পর্যন্ত বাঁচতে পারে। ২০১৯ সালের এপ্রিলে ইনগোয়া দ্বীপের কাছে নরওয়ের নৌকাগুলোর কাছে প্রথম তিমিটিকে দেখা গিয়েছিল। এলাকাটির অবস্থান মুরমানস্ক থেকে প্রায় ৪১৫ কিলোমিটার দূরে। 

মুরমানস্কে রাশিয়ার উত্তর নৌবহরের অবস্থান। তিমিটি প্রথম দেখা যাওয়ার পর বিষয়টি নিয়ে কেৌতুহলী হয়ে ওঠেন অনেকে। যার কারণ, ওই এলাকায় বেলুগা প্রজাতির তিমি সচরাচর দেখা যায় না। এ নিয়ে তদন্ত শুরু করেছিল নরওয়ের গোয়েন্দা সংস্থাও। 

রুশ সামরিক বাহিনী তিমিটিকে প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকতে পারে বলে সন্দেহ করে সংস্থাটি। যদিও অতীতে রাশিয়ার দাবি করেছিল, সামুদ্রিক স্তন্যপায়ী প্রাণীদের গুপ্তচর হিসেবে ব্যবহার করে কোনো কর্মসূচি পরিচালনা করে না মস্কো।












Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন